[:bn]টক – ঝাল – মিষ্টি [:]

[:bn]টক – ঝাল – মিষ্টি [:]

March 7, 2018

[:bn][] নামী কোম্পানির টপ একজিকিউটিভ অফিসার । দোতলায় চেম্বার, সেখানে সমস্ত সাজানো, নিজের সেলার পর্যন্ত আছে। সিকিউরিটি খুব কড়া, গেটে পাহারা আছে, তবুও কি করে যেন একটা ভিখিরি ঢুকে পড়লো চেম্বারে রিসেস পিরিওডে।
‘বাবু, কিছু দেবেন?’
বাবু দেখে অবাক। খালি গা, ময়লা ছেঁড়া ধুতি, মাথার চুলে তেল পড়েনি বহুদিন। মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। আশ্চর্য, সিকিউরিটির চোখ এড়িয়ে ঢুকলো কি করে লোকটা? বললেন, ‘সরি’ আমি আমার ওয়ালেট ফেলে এসেছি। টাকা-পয়সা দিতে পারব না।’
ঠিকই বলেছিলেন। নিজের এ.সি. গাড়িতে আসেন, ক্ষিধে পেলে কিছু আনিয়ে নিতে পারেন, একদিন পার্স ফেলে এলে কোনো অসুবিধে নেই। লোকটা বিশ্বাস করল না, ‘কি বলছেন বাবু, দু’দশ টাকা তো আপনাদের হাতের ময়লা।’
‘টাকা আনতে ভুলে গেছি’– অফিসার বললেন, ‘অন্য কিছু যদি চাও– একটু চা-বিস্কিট–‘
‘চা আমি খাইনা বাবু।’
‘খাও না? তবে তো মুশকিলে ফেললে দেখছি’– সত্যিই মুশকিলে পড়েছেন মনে হচ্ছিল, বললেন, ‘কড়া করে এক কাপ কফি দিতে বলি’?
‘না না বাবু ওসব চা-কফির বদ অভ্যাস আমার নেই।’
‘তাহলে আমি দিই কি তোমায় !’ বিরক্ত হয়ে অফিসার বললেন ‘ভালো হুইস্কি আছে, তাই না হয় খেয়ে যাও দু পেগ।’
‘ হুইস্কি !’ মদ ! ছ্যা ছ্যা ছ্যা –কী বলছেন বাবু ! জীবনে মদ আমি কখনো–‘
কথা শেষ করতে পারেনি তার আগেই অফিসার উঠে এসে ক্যাঁক করে টিপে ধরেছেন তার গলা, টানতে টানতে নামতে নামতে শুরু করেছেন সিঁড়ি দিয়ে।
‘এ কি বাবু ছাড়ুন ! কোথায় যাচ্ছেন আমাকে নিয়ে—‘
‘আমার বউ এর কাছে যাচ্ছি রে হতভাগা’— টেনে গাড়িতে তুলতে তুলতে বললেন, রোজ বউ বলে চা ছেড়ে দাও, সিগারেট ছেড়ে দাও, মদ ছেড়ে দাও ! চা-সিগারেট-ছাড়লে লোকের কি হাল হয় আমি দেখাবো তাকে।’

[]  প্রচণ্ড ভিড় বাসে ওঠা যেমন শক্ত নামাটা আরো শক্ত। ট্যাংরাকেটে পাতলা একটা লোক নিজের স্টপেজ আসছে দেখে হাত পা ছুড়ে অনেক কসরত করলে, কিন্তু কিছুতেই দরজার কাছাকাছি আসতে পারলে না। তখন প্রাণপনে চিৎকার করতে লাগলো আরে এ কন্ডাকটার ভাই, রোককে,রোককে– জেনানা হ্যায় ভাই মেরা সাথ–‘
জেনানা হ্যায় শুনলে কন্ডাকটাররা একটু বাড়তি সাহায্য করেই। দু’হাতে কনুইয়ের গুঁতোতে জায়গা করে দিয়ে লোকটা কে দরজার কাছে এনে দিল। লোকটা দরজা দিয়ে পিছিয়ে পড়ল রাস্তায়। কন্ডাকটার রুক্ষ গলায় বললে, এই তেরা জেনানা কাঁহা ?’
মুচকি হেসে বলল লোকটা, ‘দিলমে।’

[] ভিড় বাস নিয়েই আর একটা রসিকতা হোক। দুর্গাপুজো, কালীপুজো, করে মানুষের হাত একেবারে খালি হয়ে যায়, অনেক পরে আসে সরস্বতী পূজা। সরস্বতী পুজো সর্বত্র হয়— স্কুলে হয়, কলেজে হয়, লোকের ঘরে ঘরে হয়, কাজেই বিভিন্ন ক্লাবে যেসব পুজো হয় তাদের বাজেট খুবই কম। মফঃস্বলের পুজো, ঠাকুরটা কোনরকমে কুমারটুলিতে অর্ডার দেওয়া হল, তারপর একটা টেম্পু ভাড়া করে প্রতিমা নিয়ে আসা হবে, সে পয়সাও হাতে নেই। যাহোক করে শিয়ালদা পর্যন্ত এনে তুলে দেয়া হল ভেন্ডারে , এইরকমই দৈন্যদশা ক্লাবের।
সেইরকমই একটি ক্লাবের কয়েকজন সামনে একটা শিয়ালদার বাস দেখতে পেয়ে প্রতিমা তুলেছে বাসে। কন্ডাকটার তো ভাড়া ছাড়বে না, বললে, ‘এই ! মালকা ভাড়া দেও ।’
‘কী ! সরস্বতী ঠাকুর মাল হ্যায় ! এক মেম্বার রেগে মেগে অস্থির।
‘ মাল নেহি তো ক্যা হ্যায় ?’
‘ঠাকুর হ্যায় –গডসে সরস্বতী হ্যায় ।’
‘ঠিক হ্যায় –গডসেকা ভাড়া দেও ।’
হাঁ দে গা,লেকিন –মেম্বার গর্জন করে বললে,’লেডিস সিট্ ছোড় দো ।’

হর্ষবর্ধন

[:]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *